সংসারে সব পাগলের খেলা...!

avatar

img_0.08496517736268865.jpg

কোথা থেকে শুরু করব বুঝতে পারছি না।
শুরু থেকেই শুরু করি তাহলে। কি বলেন?
প্রথমেই ভূমিকা.......
পাগলদের মধ্যে পাগলামি থাকবেই। সে যে ধাঁচের পাগলই হোক না কেন। তবে আজ বলব কিছু ভদ্র পাগল দের নিয়ে।তাদের নিরীহ বোকামি সবসময় আশ-পাশের মানুষজনকে নির্মল আনন্দ জুগিয়ে আসছে।

তবে এইসকল নিরীহ আনন্দ কোনক্রমেই তথাকথিত রেসিজম অথবা আদারিং এর মত কলুষিত পোষাকের আড়ালের ভন্ডামি নয়। নিছক হাস্যরসের জন্য লেখকেরা যেমন মজাদার গল্পের অবতারনা করেন তেমনি আমাদের আশপাশের এইসকল নিরীহ পাগলেরা তাদের অজান্তেই বিনোদিত করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। আজ এইরকম কিছু পাগলদের কথাই মনে পড়ছে।

প্র‍য়াত হুমায়ুন সাহেবের লেখায় এরুপ কিছু পাগলের দেখা পেলাম। তাই বলে যে আমাদের আশে পাশে এদেরকে দেখা যায় না তা নয়। পুরোটা পড়ুন তারপর মিলিয়ে নিন। যাই হোক, যা বলছিলাম হুমায়ুন সাহেবের কল্পনা থেকে আসা হোক আর অবজার্ভেশন থেকেই হোক এই পাগলদেরকে আমার বেশ ভালো লেগেছে। কয়েকটা নমুনা দিচ্ছি....

এক লোক খুব শান্তশিষ্ট, কোন ঝামেলা নাই, পাগলামির কোন লক্ষন নাই। খালি তার বউ সামনে আসলেই সে এক বিঘত জিব্বা বের করে ভেংচি দিতে থাকে। যদিও তার বউ এর জন্য ব্যাপারটা খুবি প্যারাদায়ক। কিন্তু আস্তে আস্তে বেচারা নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। ভাবুন?

কোন এক ট্রেন স্টেশনে একজনকে হঠাৎ দেখলেন, বগিতে একজন হাত বুলাচ্ছে আর বলছে,
বাবারা লাইনে থাকিস, লাইন ছাইড়া যাইস না কইলাম...
নিসন্দেহে ভালো উপদেশ। তবে ট্রেনবাবাজি এই উপদেশটা কীভাবে নেয় তা জিগাবেন না দয়া করে। তবে শুনা যায় পাগলরাই নাকি সবচেয়ে ভালো উপদেশ দেয়। এক চাচাকে দেখেছি মোড়ের নসু পাগলার সাথে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলছে। অথচ অই পাগলের কোন কথাই এলাকার লোকেরা বুঝত না। আমি ত দেইখা থ!

আরেক পাগলের কথা বলি। এ পাগলের বাড়ি আমাদের গ্রামে। নদীকূলের ছোট্ট গ্রাম। হাতে গোনা ঘর। নানা দাদাদের কাছে শুনেছি এই পাগলের কথা। ঘটনা হল সবি ঠিক আছে, কিন্তু পাগলের হাতে থাকত একটা লম্বা লাঠি। সে সব যায়গায় লাঠি দিয়ে পানি মাপত। এই জিনিস দেখে গ্রামের সবাই ভীষন মজা পেত। সে বিভিন্ন যায়গায় পানি মেপে দেখত বাড়তেছে নাকি কমতেছে। ভাবেন কান্ড...!

তবে বেকায়দার গল্পও আছে। সেবার গ্রামে কার বিয়ে হচ্ছিল যেন। অন্য গ্রাম থেকে বরযাত্রী এসেছে। গ্রামের মোড়ল পাগলকে ডাকলেন, ভাবলেন একে দিয়ে বরযাত্রীদের আমোদ করবেন। পাগল এল। তাকে লাঠি দিয়ে বলা হল, পানি মাপ। সব্বাইকে অবাক করে দিয়ে পাগল বলল,
কী কন কত্তা, পানি কই। শুকাইন খট খট করতেছে। পাগল হইলেন্নি!

আরেকটা আছে....

এক পাগল ঘটনাচক্রে এক বিশাল রাজনৈতিক সভায় হাজির হল। হবি তো হ, মঞ্চের একেবারে সামনেই। অনেক সমাগম দেখে পাগলের কি মতিভ্রম হল কে জানে। সে মঞ্চের ঠিক সামনেই একটা উঁচু পাটাতনের উপর উঠে দাড়াল। এতিমধ্যে প্রধান অতিথি মাননীয় মহাশয়ের নিরধারিত ভাষন শুরু হল।
কিন্তু অবাক কান্ড,
অই পাগলও অবিকল নেতার মত ভাষন শুরু করল। মহাশয় তো কথা শুরুই করতে পারে না। লোকেরাও ইতিমধ্যে আমোদ পেয়ে গ্যছে।

তারা পাগলকে তুমুল হাততালি দিয়ে মজে গেল। বস্ত্র সমস্যার সমাধান করতে হবে। এই বলে পাগল পরনের সব কাপড়চোপড় খুলে হাসিমুখে সমবেতের দিকে তাকাল। জনতার মজা তখন দেখে কে? যাই হোক, পুলিশ টুলিশ এসে পাগলকে ততক্ষণে পাকড়াও করে ফেলেছে। সভা আবার শুরু হল।

কিন্তু আর জমল না মোটেই। মহাশয় তার স্পিচের ফরমেট অনুযায়ী যখন বস্ত্র সমস্যার কথা এনেছেন। আরো দুচার কথা বলবেন। তখন জনতা হো হো করে হাসিতে ফেটে পড়ল। দু এক জনকে তো বলতেও শোনা গেল,

আগে পাজামা খুইলা কান্দে লন, তারপর বস্তের কতা কন, হে হে হে...!

বোজ অবস্থা!



0
0
0.000
2 comments