কুমিল্লা শহরে একদিন!

avatar
(Edited)


IMG_20220902_131136.jpg

ঈদ শেষে ঢাকা ফিরার একমাস পূর্ন হয়েছে দুদিন হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ সময়ের ব্যস্ততার কারনে এখন আর যখন তখন বাড়ি যাওয়া হয়ে উঠেনা । কিন্তু সেদিন ক্লাস থেকে ফিরার পর দেখলাম আমার সব বন্ধুবান্ধব ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি দিকে ছুটছে। দুই-তিনদিনের বন্ধ থাকাতে আমিও আর নিজের ইচ্ছাকে আটকে রাখতে পারলাম না। হঠাৎ করেই ব্যাগপত্র গুছিয়ে বাড়ির পথে যাত্রা শুরু....

ঢাকা শহরের তীব্র যানযট পেরিয়ে বিআরটিসি যোগে রওনা হই কুমিল্লার উদ্দেশ্যে। কিন্তু বিপত্তিটা বাধে মাঝ রাস্তায় বাসে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে। নানান ঝামেলা পার করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত প্রায় এগারোটা। এতোটা সময় পরিবার আমার অপেক্ষায় জেগেই ছিলো।

যাইহোক, এবারের বাড়ি ফিরার পর্বটা পূর্ণতা পেলো বহু প্রতিক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্র সংস্করনের মাধ্যমে। দীর্ঘ দুইটা বছর নানান ঝামেলা পোহানোর পর বয়সের ভুলটা সংশোধন করার মাধ্যমে একটা চিন্তার অবসান হলো। তার মাঝেই বন্ধু শিমুল তার ক্যাম্পাস কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে আমন্ত্রণ জানালো৷ অনেক দিন ধরেই সেখানে যাওয়ার কথা বলছিলো, কিন্তু ওই যে এক বাধা ব্যাস্ততা! তাই আর যাওয়া হয়ে উঠেনি।

আগের সময়টাতে বাড়িতে আসলে ছোটবেলার বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা আর ঘুরাঘুরির করা হতো। কিন্তু জীবিকার সন্ধানে সবাই এখন ব্যস্ত। বাড়িতে আসলে এখন আর তাদেরকে খুজে পাওয়া যায়না। বাড়িতে একা একা শুয়ে বসে কাটানোর চাইতে কুমিল্লা ঘুরে আসাটাই যথার্থ মনে হলো। পাশাপাশি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডেও কিছু কাজ থাকাতে পরদিন রওনা হয়ে যাই কুমিল্লা শহরের উদ্দেশ্যে।

আজ বাধা প্রবল বৃষ্টি। হঠাৎ করেই এতো বৃষ্টি কোথা থেকে যে আসলো!!! আজ আমি ঘুরতে বের হলাম আর আজই বৃষ্টি নামার সময় হলো? এমন অনেক এলোমেলো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিলো মাথায় মধ্যে। কিন্তু কি আর করার ; প্রকৃতি তো চলবে প্রকৃতির নিয়মে, আমার পছন্দ মতো নয়।

কুমিল্লা শহরে পৌছে কোন উপায় না পেয়ে বেশ কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি উপভোগ করলাম। আজ ছাতা নিয়েও বেড় হয়নি, কে জানতো বৃষ্টি মামা হাজির হবে এর মাঝেই। যাইহোক তার কিছুক্ষন পর বন্ধুকে নিয়ে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে যাই প্রয়োজনীয় কিছু কাজ সারতে। সেটাও আবার আরেক মহা ঝামেলার কাজ, “সার্টিফিকেট সংশোধনের”। এর জন্য কতোদিন যে ঘুরতে হয় তা ভেবেই হতাশ লাগছিলো।


IMG_20220902_184501.jpg
IMG_20220901_184054.jpg

সারাদিন ঝামেলা পরানোর পর, বিকেলটাকে উপভোগ করতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ক্যাম্পাসে হাজির আমরা। বাহ! আজ ক্যাম্পাসটাকে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে। সবাই সেজেগুজে আছে, অনেকে আবার ব্যস্ত ছবি তোলায়। পরে খোজ-খবর নিয়ে জানতে পারলাম আজকে নাকি বিদায় অনুষ্ঠান। বিদায়ে সেজেসে ক্যাম্পাস৷ দীর্ঘ ৪ বছর পর কলেজের অনেক বন্ধুদের সাথেও দেখা হলো। রাতের গানের আড্ডায় তাদের সঙ্গী হলাম। ২০১৯ সালে আমি ভর্তি হয়েছিলাম এই কলেজের অর্থনীতি বিভাগে। কিন্তু এখানে আর থাকা হয়ে ওঠেনি। শুধুমাত্র একটি ক্লাস করেই বিদায় ঘন্টা বেজেছিলো। তাই এই কলেজটা আমার কাছে বেশ পরিচিত।

কুমিল্লা পর্বের শেষটা হয়েছিলো নতুন রুপে তৈরি রেলওয়ে স্টেশনে ঘুরাঘুরি আর ঐতিহ্যবাহী রসমালাই খাওয়ার মাধ্যমে। সাথে পরিবারের জন্যও রসমালাই নিয়ে ফিরতি পথে বাড়ি ফিরা। কাল আবার ফিরে যেতে হবে ব্যস্ততম নগরী ঢাকা শহরে....



0
0
0.000
4 comments
avatar

আমার এই এক কুমিল্লায় যাওয়া হলোনা!
কতবার প্ল্যান হয় কিন্তু ফলেনা।

0
0
0.000
avatar

কুমিল্লায় তেমন কিছু নাই আপু। একদিন আসলে একেবারে সব ঘুরে যেতে পারবেন 🙂সাথে বিখ্যাত রসমালাই খাওয়া 😋

0
0
0.000