কসাই

avatar

বিস্ময়কর ভঙ্গিতে, মাংসল ঠোঁটের কোনায় হাসির আভা ছড়িয়ে গফুর ঘরে ডুকে। ঘরে ডুকেই অানোয়ারের দিকে তাকিয়ে বলল, লাভলী বলছিল শহরের বড় ডাক্তার বলছে তুমি নাকি মারা যাচ্ছো, তোমার অনিষ্ট থেকে মুক্তি পাবো আমরা।

গফুর মুখ দিয়ে নোক কাটতে কাটতে বলে যাচ্ছে, খান পরিবারের সকল সহায় সম্পত্তির মালিক হবো আমি, আর আমার বউ, ছেলে মেয়েরা। তুই মরে যাওয়ার পর, চাইলে তোর স্ত্রী আমাদের সাথে থাকতে পারে, আমাদেরতো কাজের লোক লাগে। তোর ছেলেকে আমরা নিজেদের মতো মানুষ করবো। তার পড়ালেখার ব্যবস্থা করবো। কথা গুলো স্লেজ মাখিয়ে গফুর বললেও তার কথাতে দৃঢ়তার চাপ স্পষ্ট।

আনোয়ার ইচ্ছাহীনভাবেই হেসে ফেলে, একটা বিরক্তিকর শুষ্ক হাসি, যে হাসিতে মানুষের শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায় অনেকটা সেই রকম। এমন যে নিজের গলার স্বর নিজেই চিনতে পারনি আনোয়ার, গফুর হতচকিত হয়ে হয়ে দৌড়ে পালায় ঘর থেকে।

আবোল তাবোল স্বপ্ন দেখে আনেয়ার, কসাইখানার ছবি ভেসে উঠে। পিচ্চিল কাদার ন্যায় রক্ত, ছোপ ছেপ রক্ত গড়িয়ে ফড়তো মাংসের পিন্ড থেকে। হাট বারের কসাই এর ছবি জীবন্ত হয়ে উঠতো, হাড়হীন মাংস কাটার আনন্দ, লোম হাত, পান খাওয়া লালচে দাঁত। এমনকি লাল কুকুরটার ছবি স্পষ্ট সে দেখতে পেতো, যে কুকুরটা একটুকরো হাড়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতো ঘন্টার পর ঘন্টা।

ইদানিং আনোয়ার দেয়ালে পেঁচার ছবি দেখতে পায়, নাকি সে পেঁচার মতো জড়ো সড়ো হয়ে থাকে বলে দেয়ালে তার প্রতিবিম্ব দেখা যায়!

কিছুদিন পর সে আবার কসাই এর স্বপ্ন দেখে। আনোয়ার তার স্ত্রী পান্নাকে দিয়ে বাজারের কসাই কে খবর পাঠায়। জুম্মন কসাই এট সাথে কী যেনো ফিসফিস করে কথা বলে আনোয়ার। পরেরদিন জুম্মন কসাই আবার আনোয়ারের সাথে দেখা করে চলে যায়।

কয়েকদিন গফুর আবার আনোয়াের ঘরে আসে, সাথে বাড়িঘরের কাগজ পত্র, দলিল নিয়ে। আনোয়ারকে বলে সই করে দিতে। গফুর তার পরিবারের সব দায় দায়িত্ব নিবে, কেন সমস্যা হবেনা।

আনোয়ার কোন কথারই তেমন জবাব দেয়না, কেবল ফেলফেল করে ছেয়ে থাকে পুরনো দেয়ালটার দেকে, যেখানে তার চেহারার ছায়া দেখা যায়! আচ্ছা, মানুষ কীভাবে মারা যায়? ভেঙ্গাতক ভাবে প্রশ্ন করে গফুর, আনোয়ার কে।

শুন, আমি অনেক আগেই মারা গেছি, যেদিন তুই আমাদের আব্বাকে মেরে ফেলছিস ডাক্তারের সাথে শলাপরামর্শ করে সেদিনই আমি মারা গেছি। ও, আমি আমাদের আব্বা বলছি কেনো, তুই তো আমার আব্বার ওরশে জন্ম নেছনি। তুই তো আমার সৎ ভাই, আমি কেনো তোকে নিজের ভাই মনে করি!

সই করার আগে তোকে একটু জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে গফুর! আনোয়ারের কথা শুনে গফুর এগিয়ে যায়, আর এই সুযোগে আনোয়ার জুম্মন কসাই এর মাংস কাটার ছুরিটার সদ্ব্যবহার করে।

Source [Unknown]y2neyv.jpg



0
0
0.000
9 comments
avatar

Congratulations @ihfaisal! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You distributed more than 300 upvotes. Your next target is to reach 400 upvotes.
You published more than 40 posts. Your next target is to reach 50 posts.

You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

Do not miss the last post from @hivebuzz:

HiveBuzz Ranking update - New key indicators
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
0
0
0.000
avatar

গফুর নামটা দেখে আরো ছবিটা চোখে পড়ায় ভেবেছিলাম শরৎচন্দ্রের মহেশ গল্পের পুনর্লিখন হবে। পড়তে গিয়ে ভুল ভেঙ্গেছে। এটা যে একেবারেই ভিন্ন মাত্রার গল্প!

বরাবরের মতোই ভালো হয়ছে।

0
0
0.000
avatar

ভাই আপনি সবসময় উৎসাহ দেন এটা আমার বাড়তি পাওনা।
ধন্যবাদ ভাই।

0
0
0.000
avatar

Voyongkor shundor

0
0
0.000
avatar

ভয়ংকর মন্তব্য!! ধন্যবাদ আপু

0
0
0.000
avatar
(Edited)

চাপা কান্না অনেক সময় আনোয়ারের মত মানুষকে অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়।

0
0
0.000
avatar

হ ভাই ঠিক বলছেন, বিষয় টা মনস্তাত্ত্বিক ও বটে।

0
0
0.000
avatar
(Edited)

Source unknown??? Any picture if not yours you have to give the exact source of where you have taken this....

0
0
0.000
avatar

ok. Sure, thank you for Your address.

0
0
0.000