স্কুল জীবন
ছাত্রজীবনের সবচেয়ে মধুর সময় গুলোর মধ্যে স্কুল জীবনের সময় গুলো আমাদের কাছে অনেক বেশি প্রিয়। স্কুল নিয়ে আমাদের কত কি ভাবনা চিন্তা, হাজারো স্মৃতি , তার শেষ নেই। ছাত্র জীবনের মধ্যে স্কুল জীবন হলো আমাদের জন্য সোনালি সময়। স্কুল আমাদের ছাত্রজীবনের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ জায়গা। বড় হয়ে ওঠা,পড়াশোনা শিখা, মানুষের মত মানুষ হয়ে গড়ে ওঠা,বিদ্যা অর্জনের হাতেখড়ি সব কিছু আমাদের এই স্কুল জীবন থেকেই শিখা। স্কুল জীবন কেমন ছিল তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।
আমাদের এই ছোট্ট জীবনে অনেক স্মৃতি বিদ্যমান। তবে এর মধ্যে অনেক স্মৃতি আমাদের আনন্দ দেয়, অনেক স্মৃতি আমাদের দুঃখ দেয়। আমাদের জীবনের সবচেয়ে ভালো লাগার স্মৃতি গুলো হলো শৈশবে কাটানো স্কুল জীবনের স্মৃতি গুলো। স্কুলে যখন পড়াশোনা করি তখন মনে হইতো কবে স্কুল জীবন শেষ হবে,কবে কলেজে ভর্তি হব,কবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। তখন এত পড়াশোনা থাকবে না,অনেক ঘোরাঘুরি করতে পারবো,অনেক ভালো সময় কাটাতে পারবো। কিন্তু এখন অনুভব করি স্কুল জীবনের সময় গুলোই অনেক ভালো ছিলো। মাঝে মাঝে মনে হয় শৈশবের সেই সোনালি দিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম।
কিছু দিন আগে আমরা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে স্কুল ক্যাম্পাসে যাই। এইবার ছুটিতে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে প্ল্যান করি,আমাদের স্কুল ক্যাম্পাসে যাবো সাথে যমুনা নদীর পাড়ও ঘুরে আসা হবে। অনেক দিন যমুনা নদীর পাড়ে যাওয়া হয় না, সবাই মিলে একসাথে আড্ডা দেওয়া হয় না। আর আমাদের স্কুলটাও একদম যমুনা নদীর সাথেই। আমাদের গ্রামের বাসা থেকে স্কুল প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে, সিএনজি তে ৩০ মিনিটের পথ। আমাদের গ্রাম থেকে আমরা দুইজন সিএনজি করে শহরে যাই। আর শহরে তিনজন বন্ধু আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেছিল। সিএনজি থেকে নেমে আমরা রিকশা করে আমাদের স্কুল ক্যাম্পাসে যাই। প্রাণের সেই স্কুল ক্যাম্পাস দেখে স্কুল জীবনের সব স্মৃতি গুলোর কথা মনে পড়তে থাকে। আমরা সবাই একে অপরকে স্কুল জীবনের সময় গুলোর কথা স্মৃতিচারণ করতে থাকি।
স্কুল জীবনে কাটানো সময় গুলোর কথা মনে পড়লে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ি। আমার জীবনের সোনালি দিনগুলো ছিলো এই স্কুল জীবন। প্রত্যেকদিন একই ইউনিফর্ম পড়া, ভোরে ঘুম থেকে উঠে বন্ধুদের সাথে স্কুলে যাওয়া,ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে হৈ চৈ করা,বন্ধুদের সাথে টিফিন ভাগাভাগি করে খাওয়া,ছুটির ঘণ্টা দিলে সবার আগে স্কুল থেকে বের হওয়ার প্রতিযোগিতা করা, বন্ধুদের সাথে বাড়ি ফেরা, সব কিছু এখন কল্পনা মাত্র। আর কখনও এই দিন গুলো ফিরে পাবো না। সব কিছু এখন স্মৃতির পাতায় সংরক্ষিত হয়ে আছে।
আজও মনে পড়ে স্কুল প্রাঙ্গণে দাড়িয়ে অ্যাসেম্বলি করা। মাঝে মাঝে অনেক চেষ্টা করতাম অ্যাসেম্বলি না করার,কিন্তু কখনও স্যারদের চোখ ফাঁকি দিতে পারতাম না। একবার খুব সাহস করে কয়েকজন চিন্তা করলাম আমরা আজকে অ্যাসেম্বলি করবো না। আমরা কয়েকজন অ্যাসেম্বলি না করে ক্লাস রুমে বসে আছি। যে কথা সেই কাজ,কেমনে যেনো আমাদের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক বুঝতে পারেন আমরা অ্যাসেম্বলি না করে ক্লাস রুমে লুকিয়ে আছি। স্যার এসে আমাদের কান ধরে নিয়ে যায়, শাস্তি হিসেবে আমাদের রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখেন। এরপর থেকে আর কোনো দিন অ্যাসেম্বলি বাংক করার চিন্তাও করি নাই। এই দিনগুলোর কথা আজও মনে পড়ে।
টিফিনের সময় আমাদের স্কুল থেকে টিফিন খেতে দিত। প্রতিদিন কয়েকজনের টা অতিরিক্ত করে দেওয়া হত। সেই টিফিন নিয়ে প্রতিদিন করাকারি লাগতো,ছোট খাটো একটা যুদ্ধ লেগে যেত। কত না মজা হত। টিফিনের সময় বন্ধুরা মিলে টিফিন ভাগাভাগি করে খাওয়া,ক্রিকেট বল দিয়ে ফুটবল খেলা,বরফপানি খেলা সবকিছু এখন অনেক মিস করি। এই দিন গুলো আর কখনো ফিরে আসবে না। আমাদের স্কুলটা সেই আগের মতই আছে। শুধু নতুন একটা ভবন তৈরি হয়েছে আর কিছু ভবনের রং পরিবর্তন হয়েছে। আমরা স্কুল প্রাঙ্গণে অনেকক্ষন সময় অতিবাহিত করলাম। যেনো মনে হচ্ছিলো চোখের সামনে স্কুল প্রাঙ্গণের ঘটনা গুলো ভেসে আসছে। এইতো কিছু দিন আগে স্কুলে ভর্তি হলাম আর এখন ছাত্র জীবন শেষের পথে। খুব করে ইচ্ছা করে আগের সেই স্কুল জীবনে ফিরে যেতে। কিন্তু সেটা আর কখনো সম্ভব না। সময় অনেক নিষ্ঠুর,আগের অতীত সময়কে কখনো ফিরিয়ে দেয় না।
নিজের হাতে তোলা প্রাণের স্কুল ক্যাম্পাসের কিছু স্থিরচিত্র।
Congratulations @imam-hasan! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 600 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!