পিষ্ট হলো বড় ব্যাঙ্গামা আর ছোট ব্যাঙ্গামা ...!

ব্যাঙ আর ব্যাঙাচির বিয়ে হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগে । পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছিল তাদের । ধুমধাম অনুষ্ঠান করে তাদের বিয়ে হয়নি , ব্যাঙ এর বাবা বড় ব্যাঙ যেদিন ব্যাঙাচিকে দেখতে যায় তখনই সে এনগেজমেন্ট না করে বিয়ে করিয়ে দেয় । বিয়ে করে সেই দুপুরেই ব্যাঙ চলে আসে তার কর্মস্থলে ,ব্যাঙাচি থেকে যায় বাপের বাড়িতেই । সেই যুগে এতো ফোন এর ব্যবস্থা ছিলোনা তাই তাদের কথা হয়নি , ব্যাঙাচি তখন স্কুল ছাত্রী , সামনেই মেট্রিক পরীক্ষা দিবে।

InShot_20240426_235300654.jpg

ব্যাঙাচি তার খালুর বাসায় থেকে লেখাপড়া করতো , একদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় পত্রিকা পরে জানতে পারে ব্যাঙ এক্সিডেন্ট করছে , আর গুরুতর আহত হয়েছে । ব্যাঙাচি আর কিছুর খেয়াল না করে সোজা লঞ্চে করে শহরে পারি জমায় ব্যাঙ এর কাছে । সেবা যত্ন করে ব্যাঙকে সুস্থ করে তোলে ব্যাঙাচি তবে তার লেখাপড়ার ইতি ঘোষণা হয়েছিল অঘোষিত ভাবেই । ব্যাঙাচির মেট্রিক পরীক্ষা দেওয়া না হলেও তার সংসারের খুঁটি ধরার লাজ হয়ে গেলো ।

বিয়ের পর তাদের দুটো সন্তানও হলো । চারজনের মধুর সংসার , কতই না সুন্দর । তারা চারজন পরস্পর পরস্পরের সুখ দুঃখের সাথী , তারাই এই দুনিয়ায় একে অন্যের আপনজন ।

দেখতে দেখতে তাদের সন্তানেরা বড় হলো , লেখাপড়ার জন্য দূর দূরান্তে গেলো । সন্তানেরা আস্তে আস্তে খেয়াল করলো তাদের বাবা মা আগের মতন একসাথে হাসেনা , ভালো করে কথা বলেনা। বছর যায় তাদের ঝগড়া লেগেই থাকে । তাদের মধ্যে দুরুত্ব এতই এলো যে তারা বিচ্ছেদ অব্দি চলে গেলো ।

ব্যাঙ আর ব্যাঙাচির ছায়াতলে বেড়ে ওঠা তাদের সন্তানরা থমকে গেলো , তারাও তাদের সুখ হারালো ।ছোট থেকে যারা অনেক আদরে লালিত পালিত হয় বড়বেলায় সেই আদরের মাশুল দিতে দিতেই শেষ হয় অনেকের জীবন । লাশের জন্য কবর খোঁড়া হয় আর জীবন্ত লাশের জন্য কি খোঁড়া হয় ? কিছুই না , এদেরকে কেউ দাম দেয়না । অন্যের বিচ্ছেদে কষ্ট পেতে হয় এটা সন্তানেরা জানতো তবে বাবা মায়ের বিচ্ছেদে গৃহহীন হতে হয় এটা সন্তানেরা সেদিন টের পেলো !

ব্যাঙ আর ব্যাঙাচির সুখের সমাপ্তিতে পিষ্ট হলো বড় ব্যাঙ্গামা আর ছোট ব্যাঙ্গামা । কিছু ভুলের মাসুল দিতে হয় আপনজন সবাইকে , সকল প্রাণীর ক্ষেত্রেই সমান।

লেখাটি পড়বার জন্য ধন্যবাদ , আজকের মতন এখানে বিদায় নিচ্ছি , আশা করছি দেখা হবে খুব শীঘ্রই ।



0
0
0.000
0 comments