আমার মস্তিষ্কজনিত সাংসারিক সমস্যা

avatar

আমাদের সমাজ আর আমাদের মস্তিষ্কে একটা সমস্যা আছে। এখানে সমস্যা টা কি জানেন? সংসারে আমি আর তুমি ব্যাপারটা কারণ আমরা হতে পারিনি। আরও বেশী কষ্টকর ব্যাপার হচ্ছে এই মডারেট আর কর্পোরেট সোসাইটি হাউজ ওয়াইফ কে "কমা" হিসেবে ট্রীট করে। ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে তাদের অধিকাংশর মাই হাউজ ওয়াইফ আর নিজের সারাটা জীবন এই হাউজওয়াইফ এর কাছে খেয়ে পড়ে এখন ওদেরই বিপক্ষে চলে গেছে। আসলে নিজের মা কেও আর সম্মানের চোখে দেখে না। কারণ এদের কাছে টাকায় সব।

সেদিন এক জায়গায় পড়লাম একজন মেয়ে বেশ উচু গলায় বলতেছে ,

"আমি আমার স্বামীর কাছ থেকে গিফট ছাড়া আমরা অন্য সব জিনিষপত্র কেনাকাটিতে, বিল শেয়ার করি। আমি ওর কাছ থেকে আমার নিত্য প্রয়োজনীয় কিছুই নেই না। কেন নেই না ? কারণ আমার নিজেকে বহন করার যোগ্যতা এবং সক্ষমতা দুটাই আমি পরিশ্রম করে নিজের জন্য অর্জন করেছি। সক্ষমতা না থাকলে ট্যুরে যাবো না, কিনব না , দরকার হলে পুরাতন টপস দিয়েই বছরের পর বছর কাটিয়ে দেব, কিন্তু কারো কাছ থেকে নেব না। এতে কি আমাদের প্রেম কমেছে ? না , বরং বেড়েছে। ঘুমিয়ে গেলে পা টিপে টিপে ওয়াশরুমে যাওয়া হয়, যেন অন্য জনের ঘুম না ভাঙে। এয়ারপোর্টে শত শত লোকের মধ্যে কেউ কারো জুতার ফিতে বেঁধে দিতে আমাদের জাত যায় না, জ্বর হলে মাথার কাছে বসে থাকতে বিরক্তি আসে না। শুভ জানে ওর কখনো দরকার হলে আমি হাল ধরতে পারব, আমিও তাই জানি। আমরা একে অন্য কে ভালোবাসি।"

InShot_20220624_133952965.jpg
আরেক জায়গায় পড়লাম

"মাস শেষে দুইজনের টাকা একসাথে একজায়গায় রেখে যার যখন প্রয়োজনে নিজের মত করে নিয়ে খরচ করার অধিকার থাকাটাই বরং পার্টনারশিপ, তখন তাদের একটা ফ্যামিলি বলা যায় ।" আমার কাছে শেষ এই কথাটা যৌক্তিক লেগেছে ...

আমার মাথায় একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আর তা হলো , যদি কোনো কারণে তাদের মধ্যে কারো চাকরি চলে যায় বা অর্থ উপার্জনের সক্ষমতা হারায় তাহলে কি আত্মসম্মান বোধের তীব্রতার কারণে তারা অপরজনের টাকায় নিজের জীবন চালানোকে মেনে নিতে পারবে ?! উপার্জনকারী ব্যাক্তি সক্ষমতাহীন ব্যাক্তিকে সম্মান দেখাতে পারবে কী?

আমার ছোট মস্তিষ্কে ইদানিং কেন যেনো আমার মনে হয় একে অপরের প্রতি সম্মান,ভরসা নাই দেখেই টাকাকে একটা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা লাগছে পারস্পরিক সম্মান রক্ষা করতে। যার স্ত্রী ইনকাম করে না তারপরেও এয়ারপোর্টে সবার সামনে জুতা বেঁধে দেয় তার স্ত্রীর প্রতি সম্মানটা কোন লেভেলের ভাবেন। যে মহিলার হাসবেন্ড এর ইনকাম নাই, নিজেই সংসার চালায় অথচ হাসবেন্ড কে কখনো বুঝতে দেয় না যে অন্য কারো উপর সে নির্ভরশীল তার ভালোবাসা আর সম্মানের লেভেলটা কোথায় ভাবেন।

আমার কাছে মনে হয় বিয়ে একটা পার্টনারশিপ, নিজের সমান ভাগ নিয়ে আলাদা হয়ে রুম শেয়ার করার নাম বিয়ে না। বিয়ের উদ্দেশ্য একে অপরকে পরিপূর্ণ করা।

পৃথিবীতে এই যে যার যার টাকা তার তার নীতিকে সংসারে প্রয়োগ করার ব্যাপারটা, দেখি অনেক পুঁজিবাদী বিরোধী লোকজনও প্রমোট করে ।আমি খুবই দুঃখিত যে এই পোস্টে ইনসিকিউরিটির গন্ধ পাচ্ছি।

একটা কথা কি,হাউজ ওয়াইফের মতন ফ্যামিলিতে আর কেউ কন্ট্রিবিউট করে বলে আমার মনে হয়না। শুধু তাদের কন্ট্রিবিউশানটা খালি চোখে দেখা যায় না। কারণ ককন্ট্রিবিউশানটা যে টাকা না। কন্ট্রিবিউশান টা হলো আত্নত্যাগ।

যখন মন থেকে সম্মান আসে তখন "আমি দেই বলেই এত ফুটানি করতে পারো!" এই কথাটা আসেই না। না মনে না মুখে ।

কিছু সমস্যা আমাদের মস্তিষ্কে গেঁথে গেছে ।টাকা যার জগৎ তার এই নীতি সংসার জীবনে খাটেনা।

আজকের মতন বিদায় নিচ্ছি , লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ , নিরাপদ থাকবেন , আশা করছি ভালো থাকবেন৷



0
0
0.000
3 comments
avatar

Congratulations @mariumsehri! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):

You published more than 250 posts.
Your next target is to reach 300 posts.

You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

To support your work, I also upvoted your post!

Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
0
0
0.000
avatar

আমাদের দেশের অধিকাংশ মেয়ে সাংসারিক কাজের প্রতি অধিক যত্নশীল এবং তারা পরিবার গঠনের ক্ষেত্রে খুবই সচেতন। আমার মতে পার্টনারশিপ এর মাঝখানে টাকা আসা কখনই উচিত না কারণ এটা দূরত্বই তৈরি করতে পারে। তাই কে টাকা ইনকাম করতেছে এটা মুখ্য বিষয় নয় ।

0
0
0.000