Ashaa Othoba Nirashaa:একুশে মে , ২০১৫

avatar

QmwddmgT0Xww9qvqtfKuW0zPPa2C7ATW7OaGWgp3Gs0.png
found here

কড়া ঘুমকে চড় বসিয়ে নড়ে চরে বসে ইশিতা। গতকাল ভালো সময় ধরেই অংক করা হয়েছে রাতে।সারে আটটায় কোচিং ক্লাস তার আগে রিভিশন দিয়ে যেতে হবে । কোচিং থেকে পরিক্ষা নেবে আজ, মডেল টেস্ট, ভালো করতে পারলে বেতন কম রাখবে এ মাসের।
চুলায় চায়ের গরম পানি, আর ভাত উঠিয়ে দেবার সময় কিছু একটা মনে করবার চেষ্টা করে সে, যেটা কাল রাত অবধি মনে করে সবচেয়ে আনন্দ লাগছিলো তা কি করে ভুলে গেলো হঠাৎ করে!ইদানীং মনে থাকে না কিছু , অন্যান্য কলেজ পাশ করা ছেলেমেয়ে দিব্যি নিশ্চিন্তে খাচ্ছে ,পড়ছে আর তার টিউশনি, ছোট ভাইয়ের পড়াশোনা আর মাকে খেয়াল রাখতে রাখতেই দিন চলে যায়।
একটা অতীত কিছুতেই মনে করতে কষ্ট হয় নাহ, ক্লাস সেভেনে পড়ে তখন , বাবা চলে গেলেন সবাইকে ছেড়ে। লাল ড্রেসটা পরে, তার বৃদ্ধাআঙ্গুল ধরে, আর হাঁটা হলো নাহ সেদিনের পর থেকে!
বিছানার পাশে আয়রন করা হলুদ বর্নের জামাটা দেখে তার মনে পড়ে গেলো ! কেমন করে ভুলে থাকলো সকাল থেকে, আজ নিরু আসবে! আমার নিরু! এতো কষ্টে মানুষ সে, কোনোদিন কোনোজিনিসকে জোর দিয়ে বলে নি এই জিনিসটা আমার, সবসময় মনে হয়েছে , এইতো বুঝি হাত থেকে পরে ভেঙ্গে গেলো!তার এই ভালোবাসার মানুষটাকে ঘিরেই তার যাবতীয় আশা, ভরোসা এবং তার সবটুকু ভালোবাসা।
ইশিতা জানে, নিরুর নীল রঙের জামাটা বেশি পছন্দ, কিন্তু সে হলুদটাই পরবে! বেসি সেজেও যাবে নাহ আজ, যদি হঠাৎ তাকে দেখে বলে, আমার ঢাকায় একা একা কোচিং করতে ভালো লাগছে নাহ আমি এখানে চলে আসবো, তোমার সাথে এক কোচিংয়ে ভর্তি হবো!পাগল একটা! কোনোদিন কোনো ছেলেকে দেখে নি এতোটা মুগ্ধ দৃষ্টিতে কোনো মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে!
ভাত আর ডালভর্তা আর ডিমভাজি রেধে রউনা দেয় সে,ও আসবে বারোটার দিকে, হুম তার কোচিং শেষ হবে আড়াইটায়।ওটোতে যেতে যেতে কল্পনায় মনে হয়, এইতো বুঝি নিরু ডাক্তার হয়ে গেলো, ওর পড়নে সাদা আপ্রন, সে ও ইঞ্জিয়ার হয়ে গেছে, তাদের বিয়ে তারপর ফুটফুটে একটা বাচ্চা। কতোদিন হলো নিরু তাকে পাগলের মতন আদর করে নাহ! আগে সবাইকে আড়াল করে , চোখে, মুখে, নাকে ঠোঁটে হাজারটা চুমু দিতো।মনে হতো , এতো ব্যাথার জীবন, কেউ যেনো মাদকতা দিয়ে তার শরীর অবস করে ফেলছে!অনেকবার মনে হয়েছে ওকে বলতে, আমাকে নিয়ে চলো তুমি!অনেক চিল্লাইয়েও বলে সে মাঝে মাঝে , কেনো তুমি আমার সমবয়সী। আন্টিকে বলো আমাকে বউ করে নিতে ,আমি আর পারছি নাহ! তবুও সে আশায় বুক বেধে আছে, হয়তো সুখের দিন আসবে!
“দোস্ত, তোকে দারুন লাগছে”
“পাম, মারিস নাহ”
“ভাবির সাথে দেখা করতে যাচ্ছিস”
“বিয়েই হলো নাহ আবার ভাবি বলিস”
“কি আর বলবো! তোর তো আছে, আমার যে নেই”
“হা হা হা হয়ে যাবে একদিন, আর যেদিন হবে সেদিন আর চাইলেও ছুটতে পারবি না”
ফার্মগেইট থেকে দোতলা বাস, ভাড়া বিশ টাকা।সাধারনত সাভার অবধি যেতে দেড় ঘন্টা লাগে, কিন্তু আজ সময় যাচ্ছেই নাহ! আয়োজন করে সেজেছিলাম খুব , গরমে ঘেমে আবার সেই মলিন দসা হয়ে যাচ্ছি!
“ড্রাইভার মামা ফ্যানটা ছাড়ো, আর গাড়ি কি মুড়ির টিন নাকি, জায়গায় জায়গায় থামাইতাছো আর ভোড়তাছো! মিয়া ফাউল!

“তোমার এতোক্ষন লাগে আসতে, পরিক্ষা না বারোটায় শেষ হবার কথা, বাজে সারে বারো!কোনো একটা দিন এমন হলো নাহ যে আমার অপেক্ষা করতে হয় নাহ। ঢাকা থেকে প্রত্যেক শুক্রবারে আসো, আবার দাঁড়ায়ে থাকো।“
“কি করবো, এক্সট্রা পরিক্ষা নিলো”
“এই ধরো তোমার সিংগারা, পিচ্চি সিংগারা, আর কিছু খাবে নাহ এই তেলওয়ালা জিনিস ছাড়া”
“থ্যাঙ্কিয়, আর তুমি ঢাকা থেকে সুন্দর হয়ে যাচ্ছো”
“হা হা হা হোস্টেল থেকে বের ই হই নাহ, খাই আর পড়ি”
“আমি তোমার জন্য কিছু জিনিস কিনেছি, প্লিজ মানা করবা না”
“কি কিনেছো শুনি”
“একটা চায়ের ফ্লাক্স, কিছু শুকনা খাবার”
“আম্মু এগুলো দিয়ে দেয় তো প্রতিবার, এগুলা কিনতে গেলা কেনো?”
“ইচ্ছা হইছে কিনছি, এতো প্রশ্ন করবা নাহ।“
“আচ্ছা আচ্ছা রানীসাহেবান করবো নাহ, আর আজ আমি তোমাকে ঢাকা অবধি আগিয়েও দিবো”
“বলো কি! তোমার বাসায় কি বলে ম্যানেজ করবে?”
“সে নিয়ে তোমার ভাবতে হবে নাহ, চলো রাস্তা পার হয়ে বাসে উঠবো”।

এই কাঁধটায় মাথা দিয়ে অনেক দূর যাওয়া যায়, কতোদূর জানি নাহ, চোখে পানি চলে আসছে! ও কি ভাববে! আমার কাজলটাও নষ্ট হয়ে যাবে।আজ সে আমাকে এই পর্যন্ত আদর করলো না।আশে পাশে মানুষ থাকলে ও সবসময় নিজের আর আমার সম্মান ধরে রাখে।এতো ভালোবাসি ওকে আমি, আমি কিভাবে থাকবো ওরে ছাড়া, আল্লাহ তুমি পথ দেখাও, আমি ওকে ছাড়া যে নিজের অস্তিত্ব কল্পনা করতে পারি নাহ।
“এই মেয়ে চুপ করে আছো যে?”
“ভালো লাগছে নাহ, এতো কথা বলো ক্যানো, তোমাকে না বলেছি বেশি কথা বলতে নাহ”
“তোমার হাত এতো গরম হয়ে আছে ক্যানো জান”?
“জানিনা, এই আমরা কিন্তু আজ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের সামনে নামবো?”
“ক্যানো ক্যানো”
“ইচ্ছা হইছে তাই, বেশি কথা বলো”
“ইশিতা, আমার সাথে এক কাপ রাস্তায় দাঁড়িয়ে চা খাবে”
“খাবো নাহ ক্যান অবশ্যই খাবো” সাদা এপ্রন পড়া মানুষগুলোকে দেখতে দেখতে উত্তর দেয় ইশিতা!
তুমি কি স্বপ্ন দেখছো আমি বুঝি ইশিতা , আমি চেষ্টা করে যাবো তোমার স্বপ্ন পূরন করে যেতে।
আজ অনেকটা সময় হয়ে গেলো কে কোথায় কে জানে! তার জন্য আমার শেষ লিখা অনুকাব্যঃ


"ভালোবাসা "

আমাকে তুমি ভালোবেসেছিলে ঠিক দের বছর আগে!
চায়ের ফ্লাক্স কিনেছিলে, যেনো আমি পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে না যাই!

বিশ্বাস করো বা না করো, আমি চেস্টা করেছিলাম তোমাকে খুশি করতে।
পারি নি,তাই আর চেস্টা করি নাহ।
ভয় হয়! যদি দেখো আবার চেস্টা করে
হেরে যাচ্ছি।
আমি নিতে পারলেও তুমি হয়তো আর নিতে পারবে নাহ।

পারবে নাহ আর হাসিটা দিতে,যে হাসি তোমাকে নাম দিয়েছিলো সুহাসিনী।

হাসো না অনেক দিন হলো,বাস চলে আসলে আর আগের মতন বলো না" আসি "
রিক্সা নিও কিন্তু!প্রচন্ড রোদ!!!

সমাজ আমাদের অনেক কিছুই ভাবতে শেখায়
বাধিত করে মানুসিক পংগুতা দিতে এরা খুব ভালো জানে!!!!

তবুও আমার দুই চারটে ঘুনে ধরা ছেঁড়া কবিতা এখনো ডাকে,ম্রিয়মাণ শোকে কলের গানের মতন এখনো বেজে ওঠে
যদি মন কাদে,তুমি ফিরে এস এক বরষায়!



0
0
0.000
6 comments
avatar

Congratulations @nirupom.azad! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You got more than 50 replies. Your next target is to reach 100 replies.

You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

To support your work, I also upvoted your post!

Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
0
0
0.000
avatar

চমৎকার লিখেছেন ভাই। শুভকামনা রইল
20200702_143902_1.gif

0
0
0.000
avatar

Dhonnobadh vai.. Tbe apnr expression ar word akhono figure out korte prlam nah 😐

0
0
0.000