শেষ বিকেলের মেয়ে
শেষ বিকেলের দিকে বেড়িয়ে পরলাম বাসা থেকে, সন্ধ্যার চায়ের আড্ডাটা বহুদিন ধরে মিস করতেছি অনেক, সন্ধ্যায় স্টেশনে পাশে সারি সারি অস্থায়ী চায়ের দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। আর এই দোকানগুলিতে মানুষের ভিড়ের হিরিক পড়ে যায়, এমনিতেই স্টেশন হলো অন্যতম ব্যস্ত জায়গায়, যেখানে যাত্রী এবং ট্রেন সবাই থাকে ব্যস্ততার মধ্যে, আর সন্ধ্যার পর এসব চায়ের দোকানের কারনে সেখানকার ব্যস্ততা যেন বেড়ে যায় কয়েকগুণ। বিশেষকরে যুবকারই বন্ধুদের সাথে চায়ের আড্ডার জন্য এ জায়গাকে বেছে নেয়। চায়ের সাথে বিড়ি ফুকার একটি নিরাপদ স্থান।
যাইহোক, এতদিন রোজার মাস ছিলো তাই রোজা রেখে এতোটা সময় পাওয়া যেত সন্ধ্যার পর স্টেশনে গিয়ে এক কাপ চায়ের সাথে বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিবো। আর এমনিতেও সন্ধ্যার পর আমি ব্যস্ত থাকি, কারণ একটা টিউশন করাতে হয় সেসময়টাতে। যেহেতু আমার স্টুডেন্ট এখনো গ্রাম থেকে আসে নি তাই গতকাল বহুদিন পর শেষ বিকেলের পর স্টেশনের দিকে একা একাই হেঁটে যেতে লাগলাম।
এতো অনেক মাস পর আমি এখানে আসলাম, পথিমধ্যেই বহুদিন পর দেখা হয়ে যায় দু'জন বন্ধুর সাথে তাদেরকে বললাম চল স্টেশনে গিয়ে চা নেই। সাথে সাথে স্টেশনের দিকে পা চালাতে লাগলাম। স্টেশনে গিয়ে চায়ের অর্ডার দিতেই দেখা মিললো আরো একদল বন্ধুর সাথে, স্টেশন এমন একটা জায়গা যেখানে আমার সাথে এমন কখনো হয়নি যে আমি আমার কোনো বন্ধুর সাথে দেখা হয়নি। কোনো না কোনো বন্ধুর সাথে আমার দেখা হবেই, হোক সে নতুন কিংবা পুরাতন বন্ধু, দেখা কারো না কারো সাথে ঘটবেই সন্ধ্যার পরে।
আহা! সবাই মিলে আমরা চায়ের আড্ডায় মেতে উঠলাম, বহুদিন পর তাদের সাথে দেখা। আড্ডায় একেকজনের এককে ধরনের কথা, কিন্তু সবার কথার মধ্যে একটি সাদৃশ্য ছিলো, তা হলো সবাই জীবন নিয়ে সচেতন, জীবনের সামনের পথকে মসৃণ করার জন্য চিন্তিত, ব্যস্ত। আমিও তাদের সাথে আমার মতামত শেয়ার করলাম। একই জায়গায় বসে প্রায় ঘন্টা খানেকের মতো আড্ডা দিয়ে ফেললাম। এবার তবে উঠার পালা।
চায়ের কাপগুলো রেখে, বিল পরিশোধ করে প্লাটফর্ম ধরে হাটতে লাগলাম কিছুটা পথ, তারা নাকি বিড়ি ফুকবে (সিগারেটই কিন্তু আমি বিড়ি বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি) ছোট্ট একটি টং ঘরে নিয়ে গেলো এবার, সবাই একটি করে নেয়ার সময় আমার কথা জিজ্ঞাসা করল,আমি বললাম না, আমি খাই না আবার এককাপ চা নিলো এবার।
সবকিছু সেড়ে, হঠাৎ তাদের ইচ্ছা জাগলো লাইব্রেরিতে যাবে কিছু বই কিনবে। আমিও গেলাম, একেক করে তাদের সাথে বই দেখতে লাগলাম। তাদের মধ্যে একজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনার তরী আর পল্লীকবি জসীমউদ্দীন এর একটি বই নিলো। আমার চোখ পড়ল একটি কবিতার বইয়ের দিকে, নাম তার শেষ বিকেলের মেয়ে যদিও এটা একটা উপন্যাসের বই আমার নামটা ভীষণ ভালো লেগে যায়। পড়তে হবে এটা।
সাথের একজন কবিতার বই নিলো একটা, সে কবিতার বইয়ের কিছু অংশ পড়ে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, বেশিরভাগ কবিতায় শুধু মেয়ে কেন?! সাথের একজন বলে উঠলো মেয়ে ছাড়া নাকি কবিতা জমে না।
500 HP | 1000 HP | 2000 HP | 5000 HP | 10000 HP | 15000 HP | 20000 HP |