বয়সের ভারে আমার নানাভাই ও তার সাথে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা।

avatar

মানুষের বয়সের সাথে সাথে মানসিক বয়স কমে যায়। আমার মা আমাকে সবসময়ই বলতো যে মানুষের বয়স যখন বেড়ে যায় তখন তার চিন্তা-ভাবনা ও মন মানসিকতা বাচ্চাদের মতো হয়ে যায়। এর মানে আমরা যেমন ভাবে এই পৃথিবীতে আসি ঠিক নিস্পাপ শিশুর মতো, একটা সময় পরে যখন আমাদের বয়স হয় মানে যখন আমারা প্রাপ্ত বয়স্ক থেকে বয়স্ক হই এবং আমাদের বয়স ৬০-৭০ পার করে তখন থেকে আমাদের আচরণ আবার বাচ্চাদের মতো হতে থাকে। আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে আবার অনেকের তেমন একটা রোগ না থাকলেও বয়সের ভারে ঘর-বন্দি হয়ে যায়। তখন বাসায় বসে থাকা টিভি দেখে বাসায় বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো ও খাওয়া দাওয়া ছাড়া তেমন কোন কাজ থাকেনা। আমার বাসায় ও তেমন একজন আছেন।
IMG_20200501_160140.jpg
তিনি হলেন আমার নানাভাই মানে আমার নানা। বয়স প্রায় ৮৫ পার করতে চলেছে তার। এমনি তে শারিরীক দিক থেকে কোন অসুখ নেই তার। তবে বয়স এর ভারে কাবু হয়ে গিয়েছেন নানাভাই। খাওয়া দাওয়া আগের থেকে অনেকটা কমে গিয়েছে তার। এখন বাচ্চাদের মতো করে খাওয়াতে হয় তাকে। তবে বাচ্চাদের মতো আজেবাজে খাবার হলে না নেই তার। চা, বিস্কুট, চানাচুর, চকলেট, চিপ্স এই ধরনের খাবার হলে তার সারাদিন পার হয়ে যায়। তবে এখন কেউ না করেনা। কারন টা খুব সাধারণ তার এখন শেষ বয়স। এখন তার ইচ্ছা গুলো পুরণ হওয়া উচিত। তাই কোন কাজেই তাকে বাধা দেওয়া উচিৎ নয় বলে আমি মনে করি। নানা সাধারণত বাসা তেই থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময়টা ছাদে ও বারান্দায় চেয়ার নিয়ে বসে থাকে ও কি যেন ভাবতে থাকে। কি ভাবে তা জানিনা তবে শেষ দিনের অপেক্ষাতেই যে বসে আছে তা খুব ভালোভাবেই বোঝা যায়। বসে বসে অনেক সময় গান ও গায়তে শোনা যায়। সেই অনেক আগেকার দিনের সব গান। বাচ্চাদের সাথে খেলতেও ভালোবাসেন তিনি। আমার ছোট বোনের সাথে ভালই সময় পার করা হয় তার। চেয়ারে বসে থাকার পাশাপাশি নাতনীর সাথেও সময় পার করতে ভালোবাসেন তিনি। দুইজন একসাথে খেলাধুলা করে দেখে বোঝাই যাইনা যে ৮০-৮৫ বছরের একজন বয়স্ক মানুষ। দেখতে ভালই লাগে। আমার সাথেও কতই না খেলাধুলা করেছেন তিনি। সাথে করে নামাজ আদায় করতে নিয়ে গিয়েছেন। তবে এখন তাকেই নামাজ আদায় করতে নিয়ে যেতে হয়। তবে ভালই লাগে অন্তত তার সাথে তহ যেতে পারি। আমার ছোট বোনকে চকলেট চিপ্স কিনে দিলে তার জন্যও আমি নিয়ে যাই। সে খুবই খুশি হয়ে যায়। এভাবেই শেষ দিনটাও হাসি খুশি কাটুক তার এটাই আমার চাওয়া। একইভাবে খুশি থাক সকল বয়স্ক মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি সকলে। আজ এখানেই শেষ করছি। আশা করি সবার ভাল লেগেছে আমার ও আমার নানাভাইয়ের গল্প। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ।



0
0
0.000
0 comments