সিলেট ভ্রমণ...
হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার সিলেট ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে। আমার জন্মস্থান খুলনা। চাকরির সুবাদে আমি তখন নরসিংদী আমার স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকতাম। গেল বছর রোজার ঈদে আমি খুলনা বেড়াতে যাইনি। এ কারণে আমার স্ত্রী সন্তানের মন খুব খারাপ ছিল। তাই তাদের মন ভালো করার জন্য ঈদের পরের দিন আমারা সিলেট যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমাদের সাথে আমার এক অফিস কলিগ তার পরিবারকে নিয়ে যেতে রাজি হল। সিলেট যাওয়ার জন্য আমি ও আমার অফিস কলিক দুজনে মিলে একটি মাইক্রো ভাড়া করলাম। ঈদের পরের দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে আমরা যাত্রা করলাম সিলেটের উদ্দেশ্যে। আমাদের উদ্দেশ্যে শাহজালালের মাজার ও শাহপরানের মাজার ঘুরে জাফলং যাব। আমরা রাত দুইটার দিকে শাহজালালের মাজারে পৌছালাম। আমরা ঘন্টাখানেক মাজার ঘুরে ঘুরে সব কিছু দেখলাম ও মাজার জিয়ারত করলাম।
এরপর আমরা রওনা হলাম শাহ পরানের মাজারের দিকে। আমরা রাত চারটার দিকে শাহপরানের মাজারে পৌছালাম।
ওখানে মাজার জিয়ারত করে ফজরের নামাজ পড়ে ভোর ছটার সময় আমরা জাফলংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। সকাল ৭টার সময় আমাদের গাড়ি জাফলং এসে থামল।
গাড়ি থেকে নেমে জাফলং এর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এ কারণেই হয়তো একে প্রকৃতির কন্যা বলা হয়। আমরা সবাই হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে পাশে এক হোটেলে নাস্তা করতে বসলাম। পর্যটক এলাকা হওয়ায় এখানে খাবারের দামটা একটু বেশি এবং খাবারের গুণগত মানও ভালো না। যাইহোক নাস্তা শেষ করে আমরা সবাই জাফলং জিরো পয়েন্ট এর দিকে রওনা হলাম। খানিকটা সময় হাঁটার পরে আমরা সেখানে পৌছালাম। সেখানে পৌঁছানোর পরে পাহাড়ের ঝর্ণার পানিতে সৃষ্টি হওয়া নদী দেখতে পেলাম। নদীটা খুব সুন্দর পরিষ্কার পানি পানির নিচে বালি ও পাথর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আমরা অনেক সকালে যাওয়ার কারণে নদীর আশেপাশে বেশি লোকজন ছিল না। আমার একটা নৌকায় করে নদী পার হলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ঝরনার দিকে যাওয়া। বালু পথ ধরে হাঁটতে থাকলাম ঝরনার দিকে।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা দেখলাম বিশাল বড় বড় পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে। পাহাড়ের গায়ে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকার গাছ। পাহাড়ের উপর দিকে তাকালে মনে হয় আকাশ যেন পাহাড়ের সাথে মিশে গেছে। দূরে দেখতে পেলাম দুই পাহাড়ের মাঝখানে ঝুলন্ত ব্রিজ। সব মিলিয়ে খুব সুন্দর লাগছিল জাফলং এর পরিবেশ। আমরা প্রায় ৩০ মিনিট হাঁটার পরে অবশেষে ঝর্ণায় পৌঁছালাম। আপনাদের বলে বুঝাতে পারব না ঝরনা টা যে কত সুন্দর। আমি আর দেরী করলাম না আমার মেয়েকে নিয়ে নেমে পড়লাম ঝরনার শীতল পানিতে শরীরটা ভিজানোর জন্য।
বিশাল বড় বড় পাথর বেয়ে নামছে ঝর্ণার পানি। আশেপাশে প্রচুর লোক ঝর্ণার পানিতে গোসল করছে আর খুব আনন্দ করছে। সবমিলিয়ে পরিবেশটা খুব আনন্দময় হয়ে উঠলো। আমরা ওখানে ঘন্টা খানেক সময় অতিবাহিত করলাম। আমরা আবার রওনা হলাম নদীর দিকে। নদীর কাছে পৌঁছানোর পরে দেখলাম অনেক লোক নদীতে গোসল করছে। আমরাও নেমে পড়লাম নদীতে গোসল করার জন্য।নদীর পানি খুব ঠান্ডা মনে হচ্ছিল ফ্রিজের পানি। নদীতে আমরা সবাই মিলে খুব মজা করলাম। আমার মেয়ে তো খুব খুশি। সে খুব খেলা করলো পানি নিয়ে।
আনন্দ উপভোগ করতে করতে কখন যে বেলা পেরিয়ে গেল টেরই পেলাম না। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি দুপুর ১ টা বাজে। নদীর পাশে ছোট ছোট ঝুপড়ি তৈরি করা পর্যটকদের কাপড়-চোপড় চেঞ্জ করার জন্য। আমরা সেখানে যেয়ে কাপড়-চোপড় চেঞ্জ করে আমাদের গাড়ির দিকে হাটতে থাকলাম। আমরা গাড়ির কাছে এসে পৌছালাম সবাই বলল খুব খিদে লেগেছে দুপুরে লাঞ্চ করে আমরা রওনা হব। আমিও তাতে রাজি হলাম তারপরও আমার এখানে খেতে মন চাচ্ছিল না। এখানে খাবার অতটা মানসম্মত নয় বাধ্য হয়ে সবার সাথে খেলাম অল্প কিছু। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা সবাই গাড়ীতে উঠলাম। গাড়ি ছেড়ে দিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি। রাত্র ৮ বাজে আমরা বাসায় পৌছাইলাম। সেদিন আমার খুব ভালো লাগছিল পরিবারের সকলের মুখে আনন্দ ভরা হাসি দেখে। আসলে পৃথিবীর সকল মানুষই চায় তার পরিবারের সকলকে হাসি খুশি ও আনন্দের মাঝে রাখতে।
সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ কষ্ট করে আমার লেখা পড়ার জন্য
Congratulations @rummansk! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Do not miss the last post from @hivebuzz: