চাঁদের মুখে মিষ্টি হাসি

আমার একমাত্র মেয়ে রোশনী জান্নাতি চাঁদনী । চাঁদনী প্রথম যেদিন পৃথিবীর আলো দেখলো সে দিনটি ছিল আমাদের জন্য ডবল খুশির দিন কারণ প্রথমতঃ ওর জন্ম দ্বিতীয়তঃ সেদিন ছিল ঈদুল ফিতরের চাঁন রাত । এ কারণে ওর নাম রাখা হয়েছে চাঁদনী। চাঁদনী যেন নিজের সাথে করে আনন্দের ডালা সাজিয়ে এনেছে । সবাই খুব প্রশংসা করছিল যে ভালো দিনে ওর জন্ম হয়েছে । সবার প্রশংসা শুনে আমার খুব ভাল লাগছিল । আমি তখন শুধু আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছিলাম ।
যে আল্লাহ আমাকে একটি সুস্থ সন্তান দান করেছে । ছোটবেলা থেকেই ও খুব দুরন্ত ।

ওর আম্মু ওকে সামলাতে হিমশিম খেয়ে যেত । এক বছর বয়স থেকেই ওর চঞ্চলতা ও দুরন্তপনা দেখে আমরা অবাক হয়ে যেতাম । চাঁদনী বেশিরভাগ সময় ওর দাদা-দাদীর কাছে থাকতো । সারাদিন দাদার কাছে বসে থাকবে দাদার দোকান থেকে মজার খাবার খাবে এটাই ছিলো ওর কাজ । ছোট বড় সবাই ওকে খুব আদর করত এ কারণে ও সবার সাথে খুব সহজে মিশে যেতে পারত । চাঁদনী বাইরে ঘুরতে খুব পছন্দ করত । তাই ওর দের বছর বয়সে ওকে নিয়ে আমি সুন্দরবন ঘুরতে যাই ।

সুন্দরবন যেয়ে ও খুব মজা করে । ওর আনন্দ উল্লাস দেখে আমার বুকটা আনন্দে ভরে যায় । তাই আমি সময় পেলেই ওকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গা বেড়াতে যেতাম ।

আমি বাইরে থেকে কাজ শেষে ঘরে ফিরে ওর মুখের মিষ্টি হাসি দেখলে আমার শারীরিক সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যেত । আর ও যখন আব্বু বলে আমার কোলে উঠে জড়িয়ে ধরত তখন মনে হতো পৃথিবীর সমস্ত সুখ আমার বুকে ।

ছোটবেলা থেকেই ওর খুব সাজগোজ পছন্দ । ওর বয়স যখন পাঁচ তখন ওকে আমি স্কুলে ভর্তি করেদি । চাঁদনী এখন ক্লাস থ্রিতে পড়ে । আল্লাহর রহমতে চাঁদনী এই পর্যন্ত প্রত্যেক ক্লাসে ফাইনাল পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে । এ কারণে স্কুলের শিক্ষক - শিক্ষিকারা ওকে খুব আদর করে । চাঁদনী ওর আম্মুকে এবং আমাকে খুব ভালোবাসে । আসলে পৃথিবীর প্রত্যেক সন্তানই তার পিতা মাতাকে ভালোবাসে । আমিও আমার মেয়েকে খুব ভালোবাসি । আমার জীবনের চাইতেও বেশি । আমার কাছে পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর দৃশ্য হলো ওর মুখের মিষ্টি হাসি । ও যেন সারা জীবন এমন হাসিখুশি থাকতে পারে আমি আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে চেষ্টা করে যাবো ।

আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ আমাকে সময় দেওয়ার জন্য । আপনারা সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এই কামনা করি ।