লেখালিখির শুরু যেভাবে

avatar

আমি প্রথম থেকেই ফাঁকিবাজ। পড়াশুনায় আমার মত ফাঁকি বাজ খুব কমেই আছে। ফাঁকিবাজি যদি শিল্প হত তাহলে আমিও হতাম দক্ষ শিল্পি। টুক টাক লেখা লেখি করি তবে লেখক নই। আমাকে লেখক মনে করলে লেখকদের সঙ্গে বড্ড অন্যায় হবে। বড় জোর কথক বলা বলা যায়। আমি আমার কথা গুলোই বলি। আমার লেখায় জ্ঞানগর্ভ কিছু পাবেন না শুধু বাঁদরামি ছাড়া। আমার সব লেখাতেই বাঁদরামি আর কিছু বেহায়া টাইপের কিছু থাকে। যা সবার পছন্দ হবে না আমি জানি। স্বভাবসুলভ ভাবেই আমি বাদর। সব সময় ফাজলামি করতেই বেশি ভালো লাগে। সর্বদা হাসি খুশি থাকতেই পছন্দ করি। শত ব্যথা বুকে জমায়ে হাসতে ভালো লাগে। আর যেদিন থেকে শুনেছি হেসে হেসে কারো সাথে কথা বললে সদকা পরিমান সওয়াব পাওয়া যায়। হেসে হেসে কথা বলার প্রতি ইসলামের এই তাগিদ আমাকে আরো অনুপ্রাণিত করে। আল্লাহ্ তায়ালা অশেষ রহমত আমার এই হাসি মাখা মুখ। চেহারা সুরাত সবাই পছন্দ না করলেও ঠোঁটে কনায় সব সময় হাসিটা সবাই পছন্দ করে।

হাসির কথা বললে কান্নার কথাটা কেন বাদ যায়। আমি জীবনে এক বারেই হাউ মাও করে কেঁদেছিলাম। সেই দিনটি ছিল গত বছরের আজকের দিন। পুরুষ মানুষের নাকি কাঁদতে নেই। কিন্তু সেদিন শত চেষ্টা করেও কান্না থামাতে পারি নিই। হাসপাতালের এক কোনে বোন দুলা ভাইয়ের আড়ালে গিয়ে হাউ মাউ করে কেঁদেছিলাম। এক এক জনকে ফোন দিয়ে দুই বছর সাত মাসের এক মাত্র ভাগনার জীবনের প্রাণ ভিক্ষার জন্য দোয়া চাইতে গিয়েই কেঁদে ফেলেছিলাম। তবে মহান আল্লাহ কোন দোয়াই কবুল করেন নিই। কারণ মহান আল্লাহর কাছে সে অধীক প্রিয় ছিল। তাই তাকে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে দিয়েছে।
received_486334951928789.jpeg

ধূর আমার লেখার কোন লাইন ঘাট ঠিক নাই। এই দেখেন লেখা লেখি থেকে হাসা হাসি, হাসাহাসি থেকে আবার কান্না কাটিতে চলে আসলাম। আমাদের সাহিত্যের অধিকাংশ অংশ কেমন যেন ঘুরে ফিরে ঐ কান্নাকাটিতেই মিশে যায়।

আমার লেখা লেখি শুরু ফেসবুক থেকেই। ফেসবুকে ভালো ভালো লেখক রয়েছে। সত্যি বলতে কি শধু ভালো নয় অনেক ভালো ভালো লেখক রয়েছে। তবে বেশির ভাগেই রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তাদের প্রতিটা লেখার মধ্যেই ইতিহাস, দেশ, সার্বভৌমত্ব, গনতন্ত্র, দূর্নীতি, বিদ্রোহ মিশে থাকে।

আমার এমন শ'খানেক ফেসবুক বন্ধু রয়েছে যাদের লেখা যে কেউ পড়লে পছন্দ করবেই। তবে এরেই মধ্যে পক্ষে বিপক্ষে থাকবেই। মত ও আদর্শগত পার্থক্য থাকবে। একটা সময় ছিল সারাদিন তাদের লেখা গুলো পড়তাম। লাইক কমেন্টস করতাম। তখন অবশ্য এতো রিয়েক্ট ছিল না। তাদের লেখা পড়ে পড়েই আমার টুক টাক লেখা লেখি শুরু প্রথম ১/২ লাইন করে লিখতে লিখতে এখন বড় বড় লেখা শুরু। প্রথমে ৫/১০ লাইক পরতে পরতে এখন শ'খানেকের উপরে লাইক পরে। তবে লাইক গণনা করে কখনো লেখা লেখি করি নিই। তবে ফেসবুকের পোস্ট লাইক কমেন্টস এর সব কিছুই আপনার রুচির বহিঃপ্রকাশ।

এই ফেসবুকের লেখালেখি থেকে যে আজকে হাইভ পর্যন্ত আসবো সেটা কখনো কল্পনাও করি নিই। এই লেখা লেখির জন্য যে কিছু ওনারিয়াম পাবো সেটাও কখনো ভাবি নিই। আর না এইসবের জন্য লেখা লেখি করেছি। আর না কখনো ফেবুতে এঞ্জেল মেঞ্জেলদের ইমপ্রেস করার জন্য লেখা লেখি করেছি। আর না ফেসবুকের লুতুপুতু করার জন্য। আমার লেখা লেখি শুরু করার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল দেশ ও সমাজ নিয়ে। সমাজে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অন্যায়, দূর্নীতি এসবের বিপক্ষে আওয়াজ তুলার জন্য।

এইসবের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে কত বাধাই না আসে। পরিবার থেকে বাধা আসে। বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনের পক্ষ থেকে বাধা আসে। বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে কত জনে তো পিছায় ছেড়েছে আমার। তাতে কি আমি অত্যন্ত শান্ত শিষ্ট ঘাড় টেরা স্বভাবের ছেলে। ভদ্রতার সন্মান দিতে জানি তেমনি অভদ্রতার প্রতিবাদও করতে জানি।

ধুর ছাই, আবার কই থেকে কি লেখা শুরু করলাম। লেখার মধ্যে বাঁদরামি সবাই করতে পারে কিন্তু ফিনিশিং টানাটাই তো হচ্ছে ভালো লেখকের অন্যতম গুণ। যা মোটেও আমার মধ্যে নেই। কোন মতে জোড়া তালি মেড়ে শেষ করতে পারলেই নিজেকে হ্যাডম ওয়ালা মনে করি।

দেখলেন আমি কত্তবড় হ্যাডম ওয়ালা 🤣



0
0
0.000
3 comments
avatar

ভালো লেখক সবসময় ভাল মানুষ হয় না। আমি অনেককেই দেখেছি, লেখার হাত খুব ভালো। কিন্তু তাদের মেন্টালিটি খুবই খারাপ। কিবোর্ডের কারুকার্যে তারা সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে ফেলে। যেহেতু লেখালেখি দীর্ঘদিন ধরেই করছি, তাই তাদের ফাঁকফোকর গুলো আমার সহজে চোখে পড়ে। সেরকম ভালো লেখক হওয়ার চাইতে আপনার মতো ভালো মানুষ হওয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

অল্প কিছুদিন হলো হাইভের কারণে আপনার সাথে পরিচয়। কিছুই জানিনা আপনার সম্পর্কে। তবে আপনার লেখা পড়ে যতটুকু জানতে এবং বুঝতে পেরেছি: আপনি অত্যন্ত হাসিখুশি এবং সহজ সরল ভালো মনের একটা মানুষ। আপনার এই সরলতা আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে।

এই লেখার ফিনিশিংটা খুব ভাল ছিল। বিশেষ করে শেষ লাইনটা দুর্দান্ত। পুরো লেখাটা পড়তে গিয়ে মাঝে আপনার ভাগিনার কথা পড়ার সময় আমার চোখে পানি চলে এসেছে। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক। এবং তার বাবা-মা ও মামা.. সবাইকে রহমত বরকত দান করুক।

0
0
0.000
avatar

সত্যিই একটা ভালো পয়েন্ট ধরেছেন আপনি। আমাদের মাঝে এমন অনেকে আছে সত্য কে মিথ্যা আর মিথ্যা কে সত্য বানাচ্ছে কলমের জোরে। এতেই অনেক সহজ সরল মানুষ তাদের ভেল্কি বাজি বুঝতে না পেরেই মিথ্যা কে সদরে গ্রহণ করছে আর সত্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এমন অনেক লেখককে দেখেছি। কিছুর স্বার্থ আর ধান্দা পানির লোভে নিজের মেধাকে আর বিবেককে ধোঁকা দিচ্ছে।

আর আপনার সম্পর্কেও না বললেই নয়। হাইভে কয়েক জনকে ভালো লাগে তার মধ্যে আপনি একজন। আপনার লেখা আর অন্যের প্রতি আন্তরিক আমাকে ভালো লাগে।

ভাগনার কথা বললেন, কি আর বলবো ভাগনার কথা। অল্প বয়সেই সবার মন জয় করে নিয়েছিল। সুঠাম দেহের অধিকারী, বুদ্ধিতেও ছিল উপরে, আর অসাধারণ বচন ভঙ্গি যে কারোই মন জয় করে নিত। কিন্তু এক দিনের জ্বর কেড়ে নিল ভাগনাকে 😢

0
0
0.000