নোমানী ভাইয়ের ভাঁপা ইলিশ

avatar
(Edited)

তিনদিন ধরে কোন পোস্ট লিখি নিই। না হাইভে না ফেসবুকে। কেন জানি ইচ্ছা করছিলনা। আমার একটা বদ অভ্যাস আছে। কোন কিছু করার ইচ্ছা না থাকলে সেটা করি না যত গুরুত্বপূর্ণ কাজেই হোক। যখন ইচ্ছা হবে তখন করবো।

আজ লিখতে ইচ্ছা করলো লেখা শুরু করলাম কিন্তু টপিক খুঁজে পাই না। কি যন্ত্রণা রে বাবা। দূর বা*, আজ আর ভাতেই খাবো না।

ফেসবুকে ঢুকে পরলাম। ওমনি চোখে পরলো আমার প্রিয় লেখক নোমানী ভাইয়ের পোস্ট। ওনার পোস্ট পরলে আপনি না হেসে থেমে থাকতে পারবেন না। আমার যখন হাসার প্রয়োজন বোধ করি তখন নোমানী ভাইয়ের পোস্ট খুঁজে খুঁজে পড়ি। ভাইকে হাইভে লেখার জন্য ইনভাইট ও করেছি। কি ভাবছে জানি না। তবে উনি হাইভে লেখা লেখি করলে আমি নিশ্চিত বলতে পারি বিডি কমিউনিটির সদস্যদের জন্য বিনোদনের খোরাক হবে। রম্য লেখক নো-মানি ভাই ওনার লেখার মধ্যে বিনোদনের সাথে সাথে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু গুলোকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেন।

তো ফেসবুকে ঢুকতেই নোমানী ভাইয়ের পোস্ট দেখেই মুখ ভর্তি হাসি হেসে ফেললাম পড়ার আগেই। নিশ্চিত কোন ঘটনা ঘটিয়েছে নোমানী ভাই।

নোমানী ভাইয়ের হঠাৎ ভাঁপা ইলিশ খাওয়ার সখ জেগেছে। সখ যখন জাগছেই তো কে আটকায় নোমানি ভাইকে পইপই করে খুঁজে ফ্রিজের একদম ভেতরের দিকের কোনায় একটা ইলিশ মাছ খুঁজে বার করেছে । চারটা কিনেছিল, এই একটাই রয়ে গেছে। চারশ গ্রাম বা তার থেকে সামান্য কম বেশি হবে সম্ভবত। যা হোক কবি বলেছেন, সাইজ ডাজন্ট ম্যাটার, উপলক্ষটাই বড়।

গিন্নি নোমানী ভাইকে ফ্রিজ হাতাতে দেখো কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো, কি খুঁজছো? কোন জবাব দিল না। এত রাতে ইলিশ কাটাকুটা করতে হবে এটা জানলে গিন্নি বাসায় কুরুক্ষেত্র বাধিয়ে দেবে। নোমানী ভাই নিজেই ইলিশ মাছটাকে বের করে পানিতে ভিজিয়ে রেখে ঈর্ষান্বিত দৃষ্টিতে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকলো। ব্যাটা ভাঁপা হবার একটা উপলক্ষ পেয়েছে বটে!

সমস্যা হচ্ছে নোমানী ভাই মাছ কুটতে পারেনা। রান্নাও পারেনা। রান্নার সমস্যাটা না হয় ইউটিউব ঘেটেঘুটে একটা সমাধান করা যাবে বলে ভাবছিল কিন্তু কাটাকুটার কি উপায়? নোমানী ভাই তো আর কারো পেয়ারের কাকাবাবু না যে কেউ এসে একদম হেঁশেলে ঢুকে পড়ে ইলিশ ভাঁপা খাইয়ে দিয়ে যাবে। নোমানী ভাবছে নিতান্তই নগণ্য মানুষ।

সুতরাং গিন্নিকে পেটানো থুক্কু পটানো ছাড়া আর কোন পথ নেই নোমানী ভাইয়ের। গিন্নি ছেলেমেয়েকে পড়াচ্ছিলো নোমানী ভাই সুবোধ বালকের মত তার পাশে গিয়ে বসে ছেলে মেয়েকে বলল, ঠিকমত পড়াশোনা করো বাবারা! মা যে সারাদিন কষ্ট করে আবার সন্ধ্যার পরে তোমাদেরকে নিয়ে পড়তে বসে তার কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করো। আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল, রোমান্টিক টাইপের কিছু, যেমন- তোমাকে না আজকে অনেক সুন্দর লাগছে এই টাইপের... গিন্নি নোমানী ভাইকে সে সূযোগ না দিয়ে হনহন করে কিচেনের দিকে হাঁটা ধরলো। এই সূযোগে নোমানী ভাই বাসা থেকে সটকে পড়লাম। আগ্নেয়গিরি আর গিন্নিরা প্রায় কাছাকাছি টাইপের- ফাটার সময় হলে দুইটা থেকেই যতদূর সম্ভব দূরে থাকতে হয় নোমানী ভাই তা খুব ভালো করেই জানে।

নোমানী ভাই জানে ইলিশ রান্না হবে। ভেজানো ইলিশ আবার ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখবে এতটা হৃদয়হীন গিন্নি না। শুধু কাটাকুটি আর রান্নার সময়টা নোমানী ভাইকে একটু দূরে সরে থাকলেই চলবে। না হলে মাছের গায়ে যত কাটা নাই তার থেকে বেশি কথা শুনতে হবে।।

খাওয়ার সময়টায় 'আমাকে কাজের মেয়ে পেয়েছো...’ আমি আছি বলেই তোমার সংসার করতেছি। এই টাইপের খানিকটা খোটা শুনতে হবে বৈকি, তবে প্রণব বাবু স্মরণে এইটুকু বোধহয় মেনে নেওয়াই যায়। প্রনব বাবুকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভাপা ইলিশ রাঁধিয়ে খাওয়ায়েছিল। কাল প্রনব বাবুর অন্তিম যাত্রা কালে হুট করেই সেই কথা মনে পরেছিল। তাই এতো ঝাড় ঝাপটা আসতে পারে জানা সত্বেও নোমানী ভাই ভাপা ইলিশ খাবেই।

20200902_011415.jpg



0
0
0.000
0 comments