আমার দিনকাল

avatar

দুই দিন ধরে জ্বরে কুপকাত। শরীরের হাড়ে হাড়ে ব্যথা। হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া মনে হয় এটাকেই বলে। ব্যথা কাকে বলে হাড়ে হাড়ে টের পাইছি। জ্বর সারে উঠলেও ঘাড় নিয়ে এক যন্ত্রণা। ঘুম থেকে উঠেই দেখি ঘাড় আর নড়াতে পারি না। ঘাড়ের রগ নাকি নড়ে গেছে। কিছু করার নাই। ঐ ভাবেই ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে দুদিন পর বার হলাম।

আমি আবার সেই রকম চা খোর। দুদিন ধরে বাইরে চা খা নাই। জিউ কাউলাইতেছে বাইরের চায়ের জন্য। বাসা থেকে যতোই চা খায়ে বার হই না কেন বাইরে চায়ের দোকানের চা এর চুমুকে অন্যরকম ফিলিংস থাকে।

যাই হোক কলিম মোড়ে চা খাওয়ার জন্য ঢুকলাম। মাসুম লিখার মারকে এক কাপ চা লাও বলেই বসে পরলাম। ওয়ান টাইম কাপে লাল চা দিয়ে গেল নতুন ছেলে। করোনার পর থেকে এখন ওয়ান টাইমেই কাপ গুলোই সবাই ব্যবহার করছে।

চুমুক দিতেই একটা গন্ধ নাকে আসে ।
প্রথমে মনে করছিল গন্ধটা আশপাশ থেকে আসতেছে। নাক দিয়ে জোরে নিঃশ্বাস নিলাম। না, গন্ধটা বাইরে আর কোথাও লাগছে না। আবার চায়ের কাপে চুমুক দিতেই গন্ধটা আবার লাগল। এক্কেবারে পাঁঠার গন্ধ!!

যে পোলা চা দিল তারে ডাকে জিগাইলাম- ওই মিয়া চায়ে কি পাঁঠার চর্বি দিছিস?
সে একটু অবাক হয়ে নাতো! পাঁঠার চর্বি দিব কোন দুঃখে?
বললাম- তাইলে চা থেকে পাঁঠার গন্ধ বাইর হইতাসে ক্যান?
এটা শুইনা সে দেখি হাত শুঁকে।
-হাত শুঁকেন ক্যান?
-ভাই, একটু আগে আমার পাঁঠাটা গাছ তলায় বাইন্ধা আইছি। তাই.........
ধূর!! মিয়া। যান সাবান দিয়া ভাল কইরা হাত ধুইয়া আসেন।
এক ঘন্টা হইয়া গেল কিন্তু পাঁঠার গন্ধ এখনো নাকে লাইজ্ঞা আছে। আজকে সারা দিনটাই মনে হয় পাঁঠার গন্ধের সাথে থাকা লাগবে। এত্তোদিন পর কত্ত সখ করে চা খাইতে আসলাম তার উপর এই কাহিনী কেমনডা লাগে কন???

মেজাজ খারাপ করে চা ঐভাবে রাখেই বার হইলাম। বার হতেই পানোতীর সাথে দেখা। ধুর, হিন্দি চুল। কার চেহারাটা দেখলাম। আজকের দিনটা পুরোটাই শেষ। এই পানোতী একটা মাল। যৌন অর্থে কিন্তু এই মাল না।

এই পানোতী নামটার বিশেষ কারণ রয়েছে। এই ছেলে যেটার প্রতি নজর দিবে সেইটা কোন না কোন ক্ষতি হবেই। ঐ ছেলের মুখ দিয়ে কিছু বললে বা কোন কিছুর নজর দিলে সেটা খারাপ ছাড়া ভালো কিছু হবে না। এমন শত শত উদাহরণ দেওয়া যাবে।

একদিন সকাল সকাল পানোতী ফোন দিয়ে বলে আমার কাছে একটা প্রসেসর আছে মাহবুব, লাগলে নিও। আমি বললাম লাগবে না।

কিছুক্ষন পরেই দেখি আমার পিসির প্রশেসর নষ্ট। এক বন্ধুর নতুন ফোন দেখে পানোতী বার বার বলতে লাগলো ফোনটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে ফোনটা আমাকে দিয়ে দাও। পরের দিনেই ফোনটা চুরী হয়ে যায়। আরেক বন্ধুর বাসায় মোরগ ছিল সুন্দর সুন্দর দুটা। এই পানোতী তার মোরগকেও ছাড়ে নাই। দুই দিন ধরে মোরগ টা দিয়ে দাওয়াত খেতে চাওয়ার আবদার করে। ঐ মোরগ কি আর রক্ষা পায়? ঐ মোরগ ও চুরি হয়ে যায়। এই ধরনের শত শত উদাহরণ তার দেওয়া যাবে।

শুনলে অবাক হবেন যে এই পানোতী ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে পয়দা হয়েছে তাই তো ফেব্রুয়ারি মাসের একটা দিন কমে গেছে।

এর সাথেই হয়ে গেলো দেখা। দিনটা আজ আর ভালো কাটছে না আন্দাজ করায় যাচ্ছে। যাক রাজ্যের দুঃশ্চিন্তা নিয়ে রিক্সায় উঠে কিছুদূর যেতে না যেতেই বিকট শব্দে রিক্সার টায়ার পামচার হয়ে গেলো।

হেঁটেই রওনা দিলাম আমার গন্তব্যে।

20200909_112658.jpg



0
0
0.000
1 comments