সুমাইয়ার অসহায় জীবন যাপন ও তার সাথে আমার সম্পর্ক।
সুমাইয়ার জন্মদিন ছিল কাল। তার মা ব্রেইন-টিউমারে আক্রান্ত। ফলে কোন কাজ করতে পারে না। অন্যদিকে তার বাবা তাদের এই খারাপ সময়ে তাদের একা রেখে ২য় বিয়ে করে চলে গেছে। এই বয়সে ফলে তাকে বাসার জন্য খাবার ও মায়ের জন্য ঔষধ কিনতে রাস্তায় রাস্তায় মাস্ক ও ফুল বিক্রি করতে হয়। সুমাইয়ার সাথে আমার পরিচয় বেশি দিনের না। বিগত ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে তার সাথে পরিচয় হয় আমার।
আমরা তখন বন্ধুরা কয়েকজন মিলে ছবি তুলতে মেতে ছিলাম। ঠিক তখনই কোথা থেকে যেন তার আগমন হলো। তার হাতে ছিল কিছু লাল গোলাপ ফুল। এসে বল্লো ভাইয়া ফুল নেন ভাইয়া। আমি বললাম আমি ফুল দিয়ে কি করব? আমার ফুলের দরকার নেই। তখন সে বল্লো যে আপনার প্রেমিকে দিবেন। আমি বললাম আমার তো প্রেমিকা নেই রে। তখন সে বলতে লাগলো ১টা ফুল আপনাকে নিতেই হবে। আমার ফুলের কোন দরকার ছিলনা তবে সেও পিছু ছারবার মানুষ নয়।পরে না পেরে কিছু টাকা দিয়ে বললাম যে তুমি এই টাকা গুলো রাখো আমার ফুলের দরকার নেই। সে টাকা টা নিয়ে ফুল হাতে দিয়ে বল্লো ফুল গুলো নিতে। আমি ফুল গুলো নিয়ে আবার তাকেই উপহার হিসেবে দিয়ে দিলাম। ওইদিন আমরা যতোখন ছিলাম ততোখনই সে আমাদের সাথে ছিল। যাই হোক সেদিন আর বেশি দেরি না করে চলে এলাম বাড়িতে এর মাঝে তার সাথে অনেকদিন দেখা নেই। ১২দিন পর আবার আমরা গেলাম জাবিতে সেখানে ঘুরাঘুরি শেষ করে চা খেতে বসলাম। চা নিলাম, ঠিক ওইদিনের মত আবারও তার আগমন হলো। আগের দিনের মতো হাতে ফুল নেই। ওইদিন সে তার জীবন কাহিনী বল্লো। তার মায়ের অসুস্থতা ও তার বাবার ২য় বিয়ের কাহিনী ও তার জীবন যুদ্ধের কাহিনী বললো। আমি সেদিন ও কিছু টাকা দিয়ে বললাম ভাল থাকিস নিজের খেয়াল নিস সাথে আমার মোবাইল নাম্বার টা দিয়ে এলাম। বললাম কখনো দরকার হলে ফোন দিস। আবারও আগের দিনের মতোই। সাধারণ দিনের মতোই বাড়ি ফিরে এলাম। তার পরের দিনই তার ফোন তার মার নাম্বার থেকে। সে বল্লো ভাইয়া কেমন আছেন। আমি বললাম ভালোই তুমি কেমন আছো? বল্লো ভাইয়া আমিও ভালই আছি। জানেন ভাইয়া কাল আমার জন্মদিন কাল কি আপনি আসতে পারবেন? আমি বললাম কেন না। ভাবলাম মেয়ে টার তেমন কেওই নেই জন্মদিন পালন করার মত আমিই নাহয় এবার করি। তাই পরের দিন একটা কেক নিয়ে হাজির হলাম তার সাথে দেখা করতে। আমায় দেখে আনন্দে আত্তহারা হয়ে পরে সে। বল্লো ভাইয়া আমি খুবই খুশি হয়েছি আপনি এসেছেন।তারপর তার জন্মদিন পালন করা হলো তার জন্য কোন রকম উপহার নেই নি। কারন আমি জানতাম তার উপহার এর চেয়ে টাকার প্রয়োজনটা বেশি। তাই তাকে বেশ কিছু টাকা দিয়ে বললাম আজ আর মাস্ক বিক্রি করতে হবে না। এই টাকা গুলো নিয়ে বাড়ি চলে যাও,আজ তোমার জন্মদিন আজকের দিনটা তোমার মায়ের সাথে কাটাও। এখনো সে রোজ ফোন দিয়ে আমার খোঁজ-খবর নেয়। আমার ভালই লাগে তার সাথে কথা বলতে। এভাবেই তার সাথে আমার সম্পর্কটা দিন দিন গভীর হচ্ছে। আসা করি সামনে আরো হবে। বিধাতা তার সামনের দিন গুলো আর ভালো করুক আর তার এই পরিস্থিতি থেকে উঠে আশার শক্তি দিক।তার মা যেন খুব তারাতাড়ি সুস্থ হয়ে আবার আগের মতো সাধারণ জীবন যাপন করতে পারে সেটাই চাই। আমার মতো আর অনেকে তার সাহায্যের জন্য আগিয়ে আসুক কারন আমার একার পক্ষে তার ভার বহন করা সম্ভব নয়। ভালো থাকুক সুমাইয়া ও তার মতো সকল অসহায় মানুষ।
Congratulations @troublemakerrr! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Your next target is to reach 1250 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out the last post from @hivebuzz: