সেলিম চাচার অ্যাডভেঞ্চার

avatar

তখন কুমিল্লার একটি ফ্ল্যাটে ৬ জন মিলে একসাথে থাকি। পাশের ফ্ল্যাটে সেলিম চাচা থাকে। উনি পেশায় একজন স্যানিটারি ব্যবসায়ী। হাস্য রসাত্মক পূর্ণ মানুষটি দেখতে ছিপছিপে কালো এবং মিডিয়াম দেহের অধিকারী। বয়স ৪০ কি ৪৫ হবে। মাঝেমধ্যে আমরা অনেকেই উনার সাথে গল্প গুজব করতাম। কেননা উনি সবাইকে সুন্দর সুন্দর কথা বলে হাসাতে পারতেন। উনি যখন কথা বলতেন উনি নিজেও হাসতেন অন্য কেও হাসাতেন। উনি আমাদের মেসের সকলের কাছে কৌতুক ম্যান নামে পরিচিত। উনি প্রচন্ড সাহসী ও বটে।

আমরা যে ভবনে থাকি ।সেই ভবনের মালিকের ছেলের বিয়ে। সেলিম চাচা সহ আমাদের সবাইকে দাওয়াত করল ।কারন মালিকের সাথে আমাদের সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। সেলিম চাচা সহ আমরা সবাই বিয়ের চলনে গেলাম। এই অঞ্চলে বিয়ে হলে সাধারণত গ্রাম্য ভাষায় গাডা বাড়িতে (বিয়ের গেইট করে, সেখানে জামাইকে চেয়ারে বসিয়ে, বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি, শরবত এবং টাকা দাবি করা হয় সেটা কে স্থানীয় ভাষায় গাডা বাড়ি বলে) জামাইকে কিছুক্ষণের জন্য বসিয়ে রাখা হলো। তারপর মিষ্টি ,টক দই, চুনের দই এবং কনেপক্ষের দুষ্টু ছেলে মেয়েরা মরিচের দই দিয়ে জামাইকে পরীক্ষা করে ।জামাই কতটা চালাক। যাইহোক কনে পক্ষ গাডা বাড়িতে লটারি এনে দেয় ছেলে পক্ষের কাছে। লটারিতে ৫০০০ টাকা উঠে। ছেলেপক্ষ সে টাকা সম্ভবত কনের ভাই তার কাছে দেয়। সে ওই টাকা তার প্যান্টের পিছনের পকেটে রাখে। এর মধ্যে ঘটে গেল এক বিরাট কান্ড। সেলিম চাচা আমাদেরকে পাঁচশত টাকা করে দিচ্ছে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম কিসের টাকা? উনি বললেন, মেয়ের ভাই কে যে ৫০০০ টাকা দিয়েছে। আমি তা পকেট মেরে নিয়ে এসেছি। আমরা কি করব বুঝতে পারছিলাম না ।হাসবো না কাঁদবো! উনার দুর্দান্ত সাহস দেখে আমরা সবাই অবাক হয়ে গেলাম।

যদিও বিয়ের কয়েকদিন পর ঘটনাটি উনি নিজেই সবাইকে বলে দেন এবং তা নিয়ে সবাই অনেক হাসাহাসি করে।
উনার আরো একটি দুঃসাহসিক কাজ হল:
20200825_095437.jpg

উনি ব্যবসার সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতে হতো। একদিন কুমিল্লার চর্থা অঞ্চল দিয়ে সন্ধ্যে সাতটার দিকে একা একা যাচ্ছিলেন। রাস্তাটি সন্ধ্যে হলেই খুব নির্জন । সন্ধ্যের পর পর মানুষ এই রাস্তাদিয়ে তেমন যাতায়াত করে না। কেননা এই অঞ্চলটাতে সন্ধ্যে হলে পকেটমারের অনেক ভয় থাকে। এটি কুমিল্লার এক ভয়ংকর এলাকা ।তখন কিছুটা অন্ধকার কিছুটা আলো। উনি দূর থেকে দেখলেন, একটি লোক লুঙ্গি পরে দাঁড়িয়ে আছে। উনি ভাবলেন হয়তো পকেটমার হবে। তাই সে কিছু করার আগে আমাকেই কিছু করতে হবে। একটু পর দেখলেন লোকটি নিচু করে বসলো। সেলিম চাচা আরও ঘাবড়ে গেল। সেলিম চাচা লোকটির কাছে যেতে না যেতেই লোকটিকে ধরে ইচ্ছামত কিল, ঘুষি ,লাথি মেরে নিচে ফেলে দিয়ে এক দৌড় দিল। আর ওনাকে কে পায়।

পরে আমাদের সাথে যখন ঘটনাটি শেয়ার করলো। আমরা তো অবাক! লোকটি তো ভালো কেও হতে পারে। এমনও তো হতে পারে লোকটি রাস্তায় প্রসাব করতে বসেছে। আমারা উনাকে বললাম, আপনি বোধহয় কাজটি ঠিক করেননি। উনি হেসে উত্তর দিলেন, আমি ভেবেছিলাম লোকটি আমাকে ধরবে ।তাই ও আমাকে কি ধরবে ?তার আগেই আমি তাকে ধরে কতক্ষণ কেলিয়ে দিলাম।



0
0
0.000
2 comments
avatar
(Edited)

এতো বড় ফন্ট সাইজ দিলে পড়তে কিছুটা বিরক্ত লাগে। নর্মাল সাইজে পোস্ট করলেই ভালো লাগে।

এতো বড় ফন্ট সাইজ করে পোস্ট করার কারন আসলে কি? পোস্টটাকে বড় দেখানো নাকি অন্য কোন কারণ রয়েছে?

0
0
0.000
avatar

ফ্রন্ট বড় করা প্রধান কারণ নয় ।সত্যিকার অর্থে এখানে আমি নতুন। এখান থেকে আমি অনেক কিছু শিখছি এবং এখানে সকলের কাছ থেকে সহযোগিতা কামনা করছি।

0
0
0.000